কোরআন মাজীদের তাফসীর গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তির মতামতের উপর নির্ভর করার বিধান
কোরআন মাজীদের তাফসীর গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তির মতামতের উপর নির্ভর করা জায়েজ নয়। বিশেষ করে যে কোরআন, সুন্নাহ এবং আরবী ভাষায় বিশেষ পাণ্ডিত্য অর্জন করতে পারেনাই তার থেকে তাফসীর গ্রহণ করা একজন মুসলমানের ঈমানের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কোরআন মাজীদের কোন আয়াতের ব্যাখায় স্বতন্ত্র কোন মতামত প্রদান করা সাধারণ কারো জন্য জায়েজ নয়। তবে কোন ব্যাখার মূল উৎস জানা থাকলে তা উল্লেখ করা যেতে পারে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ قَالَ فِي الْقُرْآنِ بِغَيْرِ عِلْمٍ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ.
যে ব্যক্তি সঠিক ইল্ম ব্যতীত কুরআন প্রসঙ্গে কোন কথা বলে, সে যেন জাহান্নামকে নিজের জন্য বাসস্থান বানিয়ে নিল। (তিরমিজি, ইমাম তিরমিজির নিকট হাদীসটি হাসান)।
কোরআনের আয়াতের উপর স্বতন্ত্র মতামত প্রদান একদিকে যেমন হারাম, অন্যদিকে সঠিক ব্যাখার স্যাথে বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়, যার প্রভাব ব্যাপকভাবে শরীয়তের উপর পড়ে। এর ফলে যিনি মতামত প্রদান করবেন তার ঈমান যেমন ক্ষতির মধ্যে পড়বে, যারা গ্রহণ করবে তারাও ফিতনায় পতিত হবে।
হাদীসে এসেছে,
أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو قَالَ هَجَّرْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا قَالَ فَسَمِعَ أَصْوَاتَ رَجُلَيْنِ اخْتَلَفَا فِي آيَةٍ فَخَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعْرَفُ فِي وَجْهِهِ الْغَضَبُ فَقَالَ إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِاخْتِلاَفِهِمْ فِي الْكِتَابِ
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন একদিন ভোরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম। তিনি বলেন, একদা কুরআনের একটি আয়াতের ব্যাপারে দু’ লোকের মতপার্থক্যের আওয়াজ শুনতে পেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে আসলেন, এ অবস্থায় তাঁর চেহারায় রাগের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছিল। তিনি বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তীরা একমাত্র আল্লাহর কিতাবে দ্বিমত করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। (সহীহ মুসলিম)।
কোরআন মাজীদের কোন আয়াতের তাফসীর সর্বপ্রথম গ্রহণ করতে হবে কোরআন মাজীদ থেকে, তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম এর হাদীস থেকে, তারপর সাহাবায়ে কেরাম (রা) এর বর্ণনা থেকে এবং তারপর তাবেয়ীদের মতামত থেকে। এটাই হচ্ছে তাফসীর গ্রহণ করার সঠিক পদ্ধতি।